অন্তিম সফর – আয়েশা খন্দকার।
( মীর কাসেম আলীর সহধর্মিণী)
তারিখ টা ছিল ৩রা সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১লা জিলহজ্ব ১৪৩৭( সূর্য অস্ত গেলেই আরবি তারিখ অনুযায়ী নতুন দিন শুরু হয়)। রাতের কালো আধাঁর ভেদ করে ৬ টা সাদা মাইক্রো এগিয়ে যাচ্ছে একটা মহান কাজ সম্পন্ন করতে। কাজ টা হলো, মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীনের এক অনুগত গোলাম তাঁর মহান রবের আদেশ ক্রমে তাঁর দরবারে হাজির হতে যাচ্ছেন। এই মাইক্রোর যাত্রীরা সেই বান্দা কে তাঁর মহান রবের দরবারে পৌঁছে দেয়ার দুনিয়াবি শেষ কাজ গুলো সম্পন্ন করতে যাচ্ছেন। পথেই খবর আসলো, তিনটা মাইক্রোর বেশি যেতে দেয়া হবে না। আইনের শাসন বাস্তবান বলে কথা। মানিকগঞ্জ এর হরিরামপুর থানা চালা ইউনিয়ন পৌঁছানোর আগেই পরে কৌড়ি ইউনিয়ন। সেই খানকার কলতা বাজার এ আটকে দেয়া হলো গাড়ীর বহর। বলে রাখা ভাল প্রথম সংবাদ পাওয়ার পরই ৬ মাইক্রোর যাত্রীদের মধ্যে কাটছাট করে গাড়ীর সংখ্যা করা হলো ৫। তাতেও মন ভরছে আইন রক্ষাকারী সদস্যদের। তিন মানেই তিন। কোন নড়চড় নাই। উপরের আদেশ বলে কথা। বকুল আপা, ওসমান আর জামান ভাই ( মামার PS) এর অনেক অনুরোধে তারা ৪ মাইক্রো যেতে দিতে রাজি হলো। এবার পালা ৫ গাড়ীর লোকদের ৪ টা গাড়ীতে ঠেসে পুরে রওনা দেয়ার পালা। তখনই খবর এলো, সবার হৃদয়ের স্পন্দন, অসহায় মানুষের পরম অভিভাবক, এদেশ ইসলামী অর্থনীতির সফলতার রুপকার, ইসলামি মিডিয়ার স্বপ্নদ্রষ্টা মীর কাসেম আলী মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীনের দরবারে হাজির হয়ে গেছে এই দুনিয়ার সকল মায়া ছেড়ে। যদিও সংবাদটা জন্য অধির অপেক্ষায় ছিলাম ঘড়ির কাটা রাত ১০ টা ছোঁয়ার পর থেকেই। যাহোক, আইন কর্তাদের অশেষ দয়ায় ও তাদের কড়া পাহাড়ায় রাত ১১ টার একটু আগেই পৌঁছেলাম চালায়, যেখানে চির নিদ্রয়া শায়িত হবেন আমাদের মুকুট মনি। কলতা বাজার থেকেই পুলিশ আমাদের তাদের পাহারায় আমাদের নিয়ে গিয়েছিল। নিজেদের চোর ভাববো না ভি আই পি ভাববো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। আমাদের নামিয়ে দেয়া হলো প্রায় আধ কিঃমিঃ দূরে। বলা হলো গাড়ী আর সামনে যাবে না। আমরাও নিরুপায় হয়ে আধার ও ভাঙ্গা রাস্তায় মোবাইলের টর্চ লাইট ধরে এগিয়ে চললাম মীর বাড়ী মসজিদ সংলঘ্ন লেবু বাগানের দিকে। সেই বাগানে পৌঁছানোর একটু কিছু দূর আগেই আবার আইন কর্তারা হাজির আরেক রুপ মহিমায়। এবার কি ? মোবাইল জমা দিতে হবে। ডিজিটাল সরকার তো প্রযুক্তির পক্ষে, তো মোবাইলের উপর এত ক্ষেপ্যা কেন ঠিক বুঝা গেল না। পরে জানতে পারলাম, দাফন হওয়ার ছবি বা খবর যেন পৃথিবী জুড়ে না প্রচার হয় তার চেষ্টা। হায় রে, আর কত রং দেখা বাকি ? দিয়ে দিলাম মোবাইল। কিছু করার নাই। কারন, মোবাইলে সংবাদ দেয়ার চেয়ে জান্নাত গামী আল্লাহর বান্দার দাফন টা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমাদের কাছে। শেষ সময় আর কোন ঝামেলা হোক তা আমাদের কাম্য ছিল না। আমরা পৌঁছেই কবরের জন্য জায়গা নির্ধারণ করতে গেলাম। দেখি আইন কর্তারা আমরা যাওয়ার আগেই পাশাপাশি দুইটা জায়গা ঠিক করে রেখেছে। তাও আবার ঘুপচি, গাছ পালায় জংগলের ভিতর যা মসজিদের টয়লেট এর একটু পাশে। যেখান থেকে দূর্গন্ধ পেতে কোন কষ্ট করার দরকার নাই। দূর্গন্ধ নিজেই এসে ধরা দিবে। ওই জায়গাটা দেখেই মনে হলো, এমন জায়গা ঠিক করা ওদের মত লোকদের দিয়েই সম্ভব। নিম্ন রুচি আর বিকৃত মানুষিকতা তাদের উপরই সাওয়ার হয় যাদের উপর্জনে হালালের চেয়ে হারামের অংশই বেশি। আর এমন মানুষদের চক্ষুশূল হবে আল্লাহর প্রিয় বান্দা শহীদ মীর কাশেম আলী, এমন টাই কি স্বাভাবিক না ? আমরা পরিষ্কার জানিয়ে দিলাম আমরা কোথায় কবর দিতে চাই। কর্তারা এই প্রথম সদয় হলেন আমাদের উপর। শুরু হলো শহীদ মীর কাশেম আলীর চিরস্থায়ী নিবাস তৈরির কাজ। আর চলে সেই প্রবাদসম মহান নেতার আগমনে অপেক্ষা। রাত দেড়টার দিকে খবর পেলাম, তিনি রওনা হয়ে গেছেন তাঁর অনন্ত নিবাসে শায়িত হবার জন্য। রাত তিনটার কিছু আগে বা পরে রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে পদ্মার পাড়ের সেই নিবর অন্ধকার অজপাড়া গাঁয়ে বেজে উঠলো নির্মম নিষ্ঠুর নির্দয় সেই আম্বুলেন্সের তীব্র আওয়াজ। সবাইকে জানান দিল, নেতা চলে এসেছেন। এখনই যাবেন তাঁর মহান রবের দরবারে হাজির হতে। তাঁকে বহন কারী আম্বুলেন্স যতই এগিয়ে আসছে আলোর তীব্রতা ছড়িয়ে, তার আগেই চোখে পড়লো এক দল অস্ত্রধারী পুলিশ সেই এম্বুলেন্স কে পাহারা দিয়ে এগিয়ে আসছে। যিনি সারাটা জীবন শান্তির জন্য কাজ করে গেছেন, এই তাঁর প্রতিদান। হায় রে মানুষ জানলিও না কার সাথে কি আচরন করলি। জমা রইলো, হাশরের মাঠে সব হিসেব পরিষ্কার করে নেয়া হবে, ইনশা আল্লাহ ! নেতা হাজির হলেন, এবার তাঁকে হস্তান্তরের পালা! মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মেঝ মামী কে অনুরোধ করলেন একটা ফর্মে সাইন করে মামার লাশ বুঝে নিতে। মামী বললেন, আগে লাশ দেখে তারপর সাইন। পুলিশ সুপার বললেন, আগেই সাইন করুন, তারপর দেখতে দেখা হবে। এবারও আইন বলে কথা। মামী মুকুল আপাকে সাথে নিয়ে এগিয়ে গেলেন কাগজে স্বাক্ষর করতে। তারপাশে আরো ৫ জন কে স্বাক্ষর দিতে হবে। এগিয়ে গেলেন জামান ভাই, ইমরান ভাই, কামরান ভাই, ওসমান ও আমি। স্বাক্ষর শেষে নামানো হলো মামার কফিন। ডালা খুললাম আমি জামান ভাই ওসমান আর ইমরান ভাই।আরমান জান একে তো গ্রাম রাতের শেষ প্রহর। জিলহজ্বের প্রথম দিনের চাঁদ সন্ধায় দেখা দিয়েই পালিয়েছে। তারপর আবার কারফিউ দিয়ে আশে পাশে বাড়ি-ঘরের সব আলো নিভিয়ে দিয়েছে। তার টেনে এনে বাল্ব জালিয়ে দিলে ও সে আলো গাছ ঝোপ ঝার ঘেরা আসমান-জমীনেরমহাশুন্যতার সেই ঘন অন্ধকার দুর করতে যথেস্ট হয়নি । তার মাঝে তুমি বিহীন আমরা। আমি কোন জান্নাতি মানুষ দেখি নি – তোমার আব্বুকে দেখেছি। দেখেছি সেই ঘন আঁধারে জান্নাতি নূর। রুম্মান লিখেছে……
“পলিথিন এ মুড়ে দেয়া হয়েছে আমার মামাকে। কাঁপা কাঁপা হাতে আমি, জামান ওসমান আর বড় ভাই খুললাম সেই পলিথিন। সাথে সাথে গন্ধ পেলাম চা পাতার। সাদা ধবধবে কাফনের কাপড়ে মুড়ে রাখা।
সারা গায়ে চা পাতা ছড়িয়ে দেয়া। হাত টা কাঁপছে। তারপরও মাথার গিট টা খুলে নেয়া হলো। একে একে তিন টা কাপড় সরাতেই আমাদের শেষ দেখা দিলেন আল্লাহর গোলাম শহীদ মীর কাসেম আলী। অপার্থিব এক সুঘ্রান নাকে এসে লাগল। মানুষ মৃত্যুর পর সুন্দর হয়ে যায় শুনেছি -এটা জীবনের প্রথম দেখা। ফাঁসিতে মুখ বিকৃত হয়। আমার মামা তো দেখি অনেক সুন্দর হয়ে গেছেন। প্রশান্ত এক চিরনিদ্রা। জীবদ্দশায় অনেক ব্যস্ততা আর ছুটাছুটি ছিল। মানুষের কষ্ট দূর করার কি নিরন্তর চেষ্টা। তাই বিশ্রাম সেই ভাবে নেয়ার সুযোগটা হয়ে উঠেনি। এই তো এখনই বিশ্রাম আর প্রশান্তির জীবনটা বুঝি শুরু হয়ে গেল।
শেষ দেখার অভিমানী পর্বটা শুরু হলো মামী কে দিয়ে। প্রথম নজর দেখেই একটু চুপ করে রইলেন। মনে মনে হয় তাঁর জীবন সঙ্গীকে কিছু বললেন। বললেন অনন্ত বিরহের কিছু কথা।তারপর কি পরম যত্ন নিয়ে মামার মুখখানি তে ছোঁয়া আর পরশ দিয়ে হাত বুলিয়ে দিলেন, আর সূরা আল ফজরের এই আয়াত গুলো বাংলায় বললেন ” হে প্রশান্ত আত্মা! চলো তোমার রবের দিকে । শামিল হয়ে যাও আমার নেক বান্দাদের মধ্যে এবং প্রবেশ করো আমার জান্নাতে।এ অবস্থায় যে তোমার রব তোমার প্রতি সন্তষ্ট আর তুমি তোমার রবের প্রতি সন্তুস্ট । ” শুরা আল ফজর (২৭-৩০)।
এর পর একে মহিলারা এগিয়ে এলেন শেষ দেখা দেখার জন্য। সুমাইয়া কফিনের কাছে এসে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না। কান্না শুরু করেও মামার সামনে এসে মামাকে দেখে চুপ হয়ে গেল। এত সুন্দর মুখখানি দেখে আর কান্না না আসাটাই স্বাভাবিক। সবার বেলায় তাইই হলো। জামান বলছিলেন, যদি রাসুলুল্লাহ (দঃ) এর জামানায় এই মৃত্যু হতো তাহলে হয় তো আল্লাহর রাসুল (দঃ) এই কথাই বলতেন, তোমরা যদি কোন জান্নাতি কে দেখতে চাও তো মীর কাসেম আলী কে দেখে যাও”। একে একে শেষ হলো দেখার পালা। শুরু হলো জানাযার নামাজ। ভাতিজি জামাই পরিচিয়ে বহু কষ্টে হাজির হয়েছিলেন, এই শহীদী কাফেলার আরেক সঙ্গী জনাব আব্দুল হালীম। জানাযায় কেউ কেউ নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছিলেন না। কেউ ডুকরে ডুকরে কেউ বা চিৎকার করে কেঁদেছ উঠছিলেন। শেষ হলো জানাযা। কর্তাদের তীব্র ঘৃনা নিয়ে চিৎকার দিয়ে বললাম, এই বার কি করতে হবে বলুন? বললেন, এবার দাফন করে দিন। ওসমান গেল একটু দূরে বসে থাকা মামীর অনুমতি নিতে। মামী অনুমতি দিলেন, চিরনিদ্রায় শায়িত করতে কবরে নামলাম আমি, ওসমান, মিনার ভাই সালমান আর বড় ভাইয়া। সবার শেষে মামার মুখখানি কেবলা মুখি করে উঠে এলাম মামাকে অন্ধকার ঘরে একলা শুয়ায়ে রেখে।মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়া হলো এদেশের ইসলামী আন্দোলন এর ডাইনামিক সিপাহসালার শহীদ মীর কাশেম আলীর কবর। শেষ হলো শহীদ মীর কাশেম আলীর হিরক খচিত অধ্যায়। রয়ে গেলেন কোটি মানুষের হৃদয়ে। মাটি দেয়া শেষ হবার পর মুনাজাত করলেন আব্দুল হালিম ভাই। মুনাজাতের সময় হঠাৎ শুনি অন্ধকার বাগান থেকে আল্লাহ আল্লাহ বলে চিৎকার করে কান্নার রোল। যে সব মজলুম মানুষের অভিভাবক ছিলেন শহীদ মীর কাশেম আলী, তাদেরই অনেকে অথবা গ্রাম বাসী যাদের পুলিশ আসতে দেয় নাই জানাযা পরতে তারাই কান্নার সাথে চিৎকার করে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাচ্ছিলেন।”
– চলবে
“পলিথিন এ মুড়ে দেয়া হয়েছে আমার মামাকে। কাঁপা কাঁপা হাতে আমি, জামান ওসমান আর বড় ভাই খুললাম সেই পলিথিন। সাথে সাথে গন্ধ পেলাম চা পাতার। সাদা ধবধবে কাফনের কাপড়ে মুড়ে রাখা।
সারা গায়ে চা পাতা ছড়িয়ে দেয়া। হাত টা কাঁপছে। তারপরও মাথার গিট টা খুলে নেয়া হলো। একে একে তিন টা কাপড় সরাতেই আমাদের শেষ দেখা দিলেন আল্লাহর গোলাম শহীদ মীর কাসেম আলী। অপার্থিব এক সুঘ্রান নাকে এসে লাগল। মানুষ মৃত্যুর পর সুন্দর হয়ে যায় শুনেছি -এটা জীবনের প্রথম দেখা। ফাঁসিতে মুখ বিকৃত হয়। আমার মামা তো দেখি অনেক সুন্দর হয়ে গেছেন। প্রশান্ত এক চিরনিদ্রা। জীবদ্দশায় অনেক ব্যস্ততা আর ছুটাছুটি ছিল। মানুষের কষ্ট দূর করার কি নিরন্তর চেষ্টা। তাই বিশ্রাম সেই ভাবে নেয়ার সুযোগটা হয়ে উঠেনি। এই তো এখনই বিশ্রাম আর প্রশান্তির জীবনটা বুঝি শুরু হয়ে গেল।
শেষ দেখার অভিমানী পর্বটা শুরু হলো মামী কে দিয়ে। প্রথম নজর দেখেই একটু চুপ করে রইলেন। মনে মনে হয় তাঁর জীবন সঙ্গীকে কিছু বললেন। বললেন অনন্ত বিরহের কিছু কথা।তারপর কি পরম যত্ন নিয়ে মামার মুখখানি তে ছোঁয়া আর পরশ দিয়ে হাত বুলিয়ে দিলেন, আর সূরা আল ফজরের এই আয়াত গুলো বাংলায় বললেন ” হে প্রশান্ত আত্মা! চলো তোমার রবের দিকে । শামিল হয়ে যাও আমার নেক বান্দাদের মধ্যে এবং প্রবেশ করো আমার জান্নাতে।এ অবস্থায় যে তোমার রব তোমার প্রতি সন্তষ্ট আর তুমি তোমার রবের প্রতি সন্তুস্ট । ” শুরা আল ফজর (২৭-৩০)।
এর পর একে মহিলারা এগিয়ে এলেন শেষ দেখা দেখার জন্য। সুমাইয়া কফিনের কাছে এসে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না। কান্না শুরু করেও মামার সামনে এসে মামাকে দেখে চুপ হয়ে গেল। এত সুন্দর মুখখানি দেখে আর কান্না না আসাটাই স্বাভাবিক। সবার বেলায় তাইই হলো। জামান বলছিলেন, যদি রাসুলুল্লাহ (দঃ) এর জামানায় এই মৃত্যু হতো তাহলে হয় তো আল্লাহর রাসুল (দঃ) এই কথাই বলতেন, তোমরা যদি কোন জান্নাতি কে দেখতে চাও তো মীর কাসেম আলী কে দেখে যাও”। একে একে শেষ হলো দেখার পালা। শুরু হলো জানাযার নামাজ। ভাতিজি জামাই পরিচিয়ে বহু কষ্টে হাজির হয়েছিলেন, এই শহীদী কাফেলার আরেক সঙ্গী জনাব আব্দুল হালীম। জানাযায় কেউ কেউ নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছিলেন না। কেউ ডুকরে ডুকরে কেউ বা চিৎকার করে কেঁদেছ উঠছিলেন। শেষ হলো জানাযা। কর্তাদের তীব্র ঘৃনা নিয়ে চিৎকার দিয়ে বললাম, এই বার কি করতে হবে বলুন? বললেন, এবার দাফন করে দিন। ওসমান গেল একটু দূরে বসে থাকা মামীর অনুমতি নিতে। মামী অনুমতি দিলেন, চিরনিদ্রায় শায়িত করতে কবরে নামলাম আমি, ওসমান, মিনার ভাই সালমান আর বড় ভাইয়া। সবার শেষে মামার মুখখানি কেবলা মুখি করে উঠে এলাম মামাকে অন্ধকার ঘরে একলা শুয়ায়ে রেখে।মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়া হলো এদেশের ইসলামী আন্দোলন এর ডাইনামিক সিপাহসালার শহীদ মীর কাশেম আলীর কবর। শেষ হলো শহীদ মীর কাশেম আলীর হিরক খচিত অধ্যায়। রয়ে গেলেন কোটি মানুষের হৃদয়ে। মাটি দেয়া শেষ হবার পর মুনাজাত করলেন আব্দুল হালিম ভাই। মুনাজাতের সময় হঠাৎ শুনি অন্ধকার বাগান থেকে আল্লাহ আল্লাহ বলে চিৎকার করে কান্নার রোল। যে সব মজলুম মানুষের অভিভাবক ছিলেন শহীদ মীর কাশেম আলী, তাদেরই অনেকে অথবা গ্রাম বাসী যাদের পুলিশ আসতে দেয় নাই জানাযা পরতে তারাই কান্নার সাথে চিৎকার করে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাচ্ছিলেন।”
– চলবে