অন্তরে বিচ্ছেদের হাহাকার নিয়ে একে একে ১৪টি ঈদ আব্বাকে ছাড়া অতিবাহিত করলাম । মনের মাঝে অব্যক্ত অনেক দুঃখ, বেদনা, কষ্ট । তাই গতকাল আব্বার সাথে দেখা করে ফিরে এসেও কিছু লিখতে মন চায়নি । বিষণ্ণতা মনকে আকড়ে ধরেছিলো ।
আমাদের এই দুঃখ বেদনা অনেকেই বুঝবেন না ।
ঈদ ছোট-বড়, ধনী-গরীব সকল মানুষের মাঝে আনন্দের এক বার্তা নিয়ে হাজির হয় প্রতিটি বছর । আমাদের "ঈদ" যেন ঐ উচু লাল দালানের মধ্যে বন্ধি আর এবারের ঈদে বাংলার আকাশ, সন্তান হারা মায়ের আহাজারি, স্বামী হারা স্ত্রীর আর্তনাত, ভাই হারা বোনের মর্মস্পর্শী মায়াকান্না ভারী করে তুলেছে । আপনজনের বিয়োগের বেদনা নাড়া দিচ্ছে ! হৃদয়ের অজানা কোন স্থানে প্রচন্ড আঘাত এফোঁড় ওফোঁড় করে দিচ্ছে । আমাদের মতোন তাদের ঘরেও নেই কোন আনন্দ ।
নির্বিচারে গ্রেফতার, খুন আর গুমের কারনে হারিয়ে যাওয়া অসংখ্য মায়ের সন্তানের অনুপস্থিতি তাদের পরিবারে ঈদের আনন্দ এনে দিতে পারেনি । সে সংখ্যা এখন অনেকের-ই অজানা । সমবেদনা জানায় অনেকে তবুও হারানো ব্যথা বা বিচ্ছেদের যন্ত্রনা কি সকলে বুঝাতে/বুঝতে পারে ?
অনেকেই মোবাইলে এবং ফেইসবুকের ইনবক্সে ম্যাসেজ করে জানতে চেয়েছেন প্রিয় আল্লামা সাঈদী হুজুর কেমন আছেন ? সকলকে আলাদাভাবে উত্তর জানাতে পারিনি তাই একসাথে সবার উদ্দেশ্যে এই লেখা ।
ঈদ উপলক্ষে গতকাল দুপুর ২টার সময় আব্বার সাথে দেখা করেছি । অনেকেই তাঁকে একনজর দেখতে চান । জেল/কারাগার আইন অনুযায়ী আমরা তো সেই সুযোগ করে দিতে পারিনা তবে আপনাদের সালাম পৌঁছে দেই । আপনারা যে তাঁকে এখনো মন প্রান দিয়ে ভালোবাসেন-স্বরন করেন সেকথা জানাই এবং তিনিও উপলব্ধি করেন । গভীর রাতে আপনাদের চোখের পানি, আপনাদের নফল রোজা এবং সম্মানিত হাজী ভাই বোনদের পবিত্র মক্কা-মদীনা-মিনা-মুজদালিয়া-আরাফার ময়দানে কান্না জড়িত কন্ঠে দোয়ার বদৌলতে তিনি শারীরিক ভাবে সুস্থ ও মানসিক দিক থেকে দৃঢ় আছেন । আলহামদুলিল্লাহ ! আল্লাহর শাহী দরবারে লক্ষকোটি শুকরিয়া । কারাগার থেকে আপনাদেরকে সালাম এবং ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন । সেই সাথে হতাশ না হয়ে বেশী করে আল্লাহর দরবারে ধর্না দিতে বলেছেন । গভীর রাত অর্থাৎ সূর্যদোয়ের পূর্বে এবং আসর নামাজের পর সূর্যাস্তের পূর্বে দোয়া কবুল হয় । ওই সময় গুলোতে চোখের পানি ফেলে দোয়া করা ।
যুগে-যুগে ইসলামী আন্দোলনের উপর অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন হয়েছে নানা ভাবে, নানা কৌশলে । বার বার থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে ইসলাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে । কিন্তু কোন দলন নিপীড়নই ইসলামী আন্দোলনের পথচলা থামিয়ে দিতে পারেনি, এখনও পারবে না । আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই সমস্ত ত্যাগের বিনিময়ে এই জমিনে আল্লাহর দ্বীনের পতাকা উড়বেই, ইনশাআল্লাহ ।
ইয়া আল্লাহ ! আপনার সকল গুনবাচক নামের উছিলা দিয়ে, আপনার কাছে
আবেদন করি-করুনা ভিক্ষা চাই, কুরআনের পাখি আল্লামা সাঈদীকে সুস্থ্ শরীরে, নেকহায়াত দিয়ে- জালিমের কারাগার থেকে মুক্ত করে, আমাদের মাঝে তাফসীরুল কুরআনের ময়দানে, মসজিদের আঙ্গিনায় ফিরিয়ে দেন ।
হে আল্লাহ ! প্রয়োজনে আমার জীবনের বিনিময়ে কুরআনের পাখি সহ সকল
ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদেরকে, জালিমের জুলুম নির্যাতন থেকে
মুক্তির ব্যবস্থা দিন । আমিন -ইয়া রব্বাল আলামীন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন