“আমার সন্তানের মাঝে আমি বেঁচে থাকবো বহু বহুদিন”
আপন সন্তানদেরকে নিয়ে সবাই আশা করে, স্বপ্ন দেখে । যেদিন থেকে মাতৃগর্ভে সন্তান আসে সেদিন থেকেই মা বাবা আশায় বুক বাঁধে সন্তানটি হয় ছেলে হবে অথবা মেয়ে হবে । তবে আমাদের বাংলাদেশ বা ভারতীয় উপমহাদেশের বেশিরভাগ দম্পতির চাওয়া থাকে যেন তাদের একটি ছেলে সন্তান হোক । ভূমিষ্ঠ হওয়ার সাথে সাথে সন্তান যদি ছেলে হয় তাহলে সেই ছেলেকে নিয়ে কতো আশায় স্বপ্নে জাল বাঁধে । ছেলেটি হবে জজ ব্যারিস্টার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হাফেজ, মাওলানা এ ধরনের অনেক কিছুই আশা করতে থাকে বাবা মা । এবং সব বাবা-মাই তাদের সন্তানের পিছে রক্ত জল করা টাকা খরচ করতে থাকে ।
প্রত্যেক বাবা মা চায় যে, তাদের সন্তান অবশ্যই মানুষের মতো মানুষ হোক কিন্তু কখনো কখনো হয়তো তাদের সেই চাওয়া পূরণ হয় না তখনই সারা জীবন দুঃখে ভুগতে থাকে । তবে আমরা যতোই ছেলে সন্তান চেয়ে থাকি না কেন মেয়েরা কিন্তু কম যায় না । মেয়েরা অত্যান্ত লক্ষীমন্ত হয়ে থাকে, বেশিরভাগ মেয়ে হয় যত্নশীল আদরের ।ছেলে মেয়ে উভয়ই বাবা মায়ের জন্য আশির্বাদ । আমরাতো স্কুল, কলেজ মাদরাসায় সন্তানদেরকে পড়াচ্ছি সেই সাথে যদি ধর্মীয় শিক্ষা ও অনুশাসনের মধ্যে রাখতে পারি সর্বপরি সৃস্টিকর্তা সম্পর্কে সমুহ জ্ঞান সন্তানকে দান করতে পারি, সন্তানদের মনে মহান আল্লাহর প্রতি ভয় জাগ্রত করতে পারি কেননা সন্তানকে বুঝতে হবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা দিনে রাতে, প্রকাশ্যে গোপনে কিংবা মনে মনে যা করি না কেন আল্লাহ সবই দেখছেন, শুনছেন, জানছেন এবং আমার সকল কৃতকর্মের বিচার হবে এই জ্ঞান বা ভয় থাকলে আমরা যেমন অন্যায় কাজ অপরকে ঠকানো, দুর্নীতি সন্ত্রাস থেকে দুরে থাকবো তেমনি আমাদের কলিজার টুকরা সন্তানরাও মানুষের মতো মানুষ হবে ।
তবেই ছেলে বা মেয়ে অবশ্যই আপনাকে বেশি সুখ, চক্ষু শীতল করা শান্তিতে ভরে দিবে আপনার আমাদের জীবন ।
এটি ঠিক কথা- সন্তান, সর্বশক্তিমান আল্লাহর দান, আল্লাহ যদি দান না করে তাহলে অবশ্যই ছেলে সন্তান হোক আর মেয়ে সন্তান হোক মানুষের তো কোন ক্ষমতা নেই সে সন্তান পৃথিবীকে নিয়ে নিয়ে আসে । তাই অবশ্যই দয়াময় করুনাময় আল্লাহর দেয়া সন্তান আমাদেরকে ভালোভাবে মানুষ করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে আমাদের জীবনে কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে না পারে । সন্তান হলো সম্পদ তা যেন আপদ না হয় ! অর্থাৎ আমাদের প্রতিটি শিশুকেই মনুষত্ব, মানবিক গুণসম্পন্ন তৈরি করা উচিত ।
আমাদের সন্তানের সুন্দর আগামীর জন্য, আমাদের অসুন্দর ব্যবহার/অসৎ কর্ম/বদঅভ্যাসের বর্তমানকে ত্যাগ করতে হবে । পরিকল্পিত সংসার জীবনই নিয়ে আসবে কল্যানকর সমাজ ।
“ধর্মীয় জ্ঞানহীন সন্তান থাকার চেয়ে নিঃসন্তান হওয়া ভালো।” কিছু করতে না পারলেও ধর্মীয় জ্ঞান থাকলে পিতা মাতার মৃত্যুর পর আল্লাহর শাহীদরবারে চোখের পানি ফেলে দোয়াতো করতে পারবে !
এটিও আবার ঠিক যে অশিক্ষিত সন্তান থাকার চাইতে নিঃসন্তান থাকা ভালো । কারণ অশিক্ষিত সন্তান কোন দায়িত্ব পালন করতে পারেনা বা তাকে জীবনের বোঝাই মনে করা হয় সে আবার বাবা মাকে দেখবে কি করে বা সমাজকে দেখবে কি করে সে নিজেই তো সমাজের বোঝা হয়ে বেঁচে থাকে । তাই আমাদের উচিত প্রত্যেকটি সন্তানকেই সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা ।
অবশ্যই একজন মানুষ তার শিক্ষা জ্ঞান ও কর্মের মাধ্যমে বেঁচে থাকে তবে তার সন্তানকে যদি সে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে তাহলে সেই সন্তানের মধ্যে অবশ্যই অনেক দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকা সম্ভব । সন্তানকে সৎমানুষ, সুনাগরিক করা একটি কর্ম ।
মৃত্যুর স্বাদ সকলকেই গ্রহন করতে হবে, তবে সুখকর হয় যদি বলি...
“আমি চিরবিদায় নিচ্ছি না, আমার সন্তানের মাঝে আমি বেঁচে থাকবো বহু বহুদিন ।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন