সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

 মুমিন কখনো হতাশ হয় না 



আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেনঃ قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ

মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে (সুরা মুমিনুন, আয়াত-০১) একজন মুমিন, একজন ঈমানদার, একজন আল্লাহপ্রেমী মানুষ কখনোই হতাশ হতে পারে না । হতাশা মুমিনের সাথে যায় না । সবসময় আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে তাঁর করুণা, দয়া এবং স্নেহের যে আলোকধারা মুমিনের ওপর বর্ষিত হচ্ছে, তা থেকে আপনি (মুমিন) কীভাবে নিরাশ হবেন ? ইহকালীন ব্যর্থতা, পরাজয়ে আপনার কী আসে যায় ?
যারা আল্লাহর ওপর নির্ভর করে, তারা হতাশ হয় না । দুনিয়ার অপূর্ণতা তাদের আঘাত দেয় না; বরং তারা প্রতিক্ষার প্রহর গোনে মহা সফলতার । সেই সফলতা, যার ওয়াদা দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহতায়ালা । আপনার আত্মা যখন আল্লাহর ভরসায় পরিপূর্ণ তখন সিজদায় গিয়ে বলুন-
قُلعِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا ۚ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছো তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না । নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন । তিনি অত্যান্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু ।’ (আয-যুমার, আয়াত-৫৩)
আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের উপর বিপদ আপদ দিয়ে পরীক্ষা করেন কাজেই
বলতে হয়, ‘দুনিয়া হলো মুমিনের জন্য কারাগার।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-২৯৫৬) সুতরাং কারাগার শান্তি কিংবা আরাম আয়েশের জায়গা না । এটা দুঃখ-কষ্ট-বেদনা-যন্ত্রণার জায়গা । থাকা খাওয়ার কষ্ট, ভালো না লাগা প্রিয় মানুষ হারানোর যন্ত্রণা, নিজের স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়ন করতে না পারার অসীম বেদনা মনের গহীনে লুকায়িত সুপ্ত যন্ত্রণা যা হয়তোবা এ পৃথিবীর কেউ জানে না ।
অতএব যারা মুমিন আল্লাহর প্রকৃত মুমিন বান্দা তাদের জন্য তো দুনিয়া কারাগার । আর কারাগার মানেই তো দুঃখ আর কষ্টের জায়গা । মুমিনের জন্য দুনিয়াতে দুঃখ কষ্ট থাকবে এটাই স্বাভাবিক তবুও মুমিনে কখনো হতাশ হবে না । মুমিন এই সমস্যাগুলোকে সাথে নিয়েই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার ওপর ভরসা করে হতাশ না হয়ে আমৃত্যু ঐক্যবদ্ধ হয়ে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে । আর এটাই হলো একজন প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য ।
আসুন ঐক্যবদ্ধ হই । সংগ্রাম করি, বিপদ দেখলেই হতাশ না হই, মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর শাহী দরবারে সিজদা অবনত হয়ে ফ্যাসিস্টদের সকল জুলুম নির্যাতন, গুম খুন, মামলা হামলা হতে সাহায্য চাই । আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ওয়াদা করেছেন মুমিনরা বিজয়ী হবেই ।

 “আমার সন্তানের মাঝে আমি বেঁচে থাকবো বহু বহুদিন” 



আপন সন্তানদেরকে নিয়ে সবাই আশা করে, স্বপ্ন দেখে । যেদিন থেকে মাতৃগর্ভে সন্তান আসে সেদিন থেকেই মা বাবা আশায় বুক বাঁধে সন্তানটি হয় ছেলে হবে অথবা মেয়ে হবে । তবে আমাদের বাংলাদেশ বা ভারতীয় উপমহাদেশের বেশিরভাগ দম্পতির চাওয়া থাকে যেন তাদের একটি ছেলে সন্তান হোক । ভূমিষ্ঠ হওয়ার সাথে সাথে সন্তান যদি ছেলে হয় তাহলে সেই ছেলেকে নিয়ে কতো আশায় স্বপ্নে জাল বাঁধে । ছেলেটি হবে জজ ব্যারিস্টার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হাফেজ, মাওলানা এ ধরনের অনেক কিছুই আশা করতে থাকে বাবা মা । এবং সব বাবা-মাই তাদের সন্তানের পিছে রক্ত জল করা টাকা খরচ করতে থাকে ।

প্রত্যেক বাবা মা চায় যে, তাদের সন্তান অবশ্যই মানুষের মতো মানুষ হোক কিন্তু কখনো কখনো হয়তো তাদের সেই চাওয়া পূরণ হয় না তখনই সারা জীবন দুঃখে ভুগতে থাকে । তবে আমরা যতোই ছেলে সন্তান চেয়ে থাকি না কেন মেয়েরা কিন্তু কম যায় না । মেয়েরা অত্যান্ত লক্ষীমন্ত হয়ে থাকে, বেশিরভাগ মেয়ে হয় যত্নশীল আদরের ।

ছেলে মেয়ে উভয়ই বাবা মায়ের জন্য আশির্বাদ । আমরাতো স্কুল, কলেজ মাদরাসায় সন্তানদেরকে পড়াচ্ছি সেই সাথে যদি ধর্মীয় শিক্ষা ও অনুশাসনের মধ্যে রাখতে পারি সর্বপরি সৃস্টিকর্তা সম্পর্কে সমুহ জ্ঞান সন্তানকে দান করতে পারি, সন্তানদের মনে মহান আল্লাহর প্রতি ভয় জাগ্রত করতে পারি কেননা সন্তানকে বুঝতে হবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা দিনে রাতে, প্রকাশ্যে গোপনে কিংবা মনে মনে যা করি না কেন আল্লাহ সবই দেখছেন, শুনছেন, জানছেন এবং আমার সকল কৃতকর্মের বিচার হবে এই জ্ঞান বা ভয় থাকলে আমরা যেমন অন্যায় কাজ অপরকে ঠকানো, দুর্নীতি সন্ত্রাস থেকে দুরে থাকবো তেমনি আমাদের কলিজার টুকরা সন্তানরাও মানুষের মতো মানুষ হবে ।
তবেই ছেলে বা মেয়ে অবশ্যই আপনাকে বেশি সুখ, চক্ষু শীতল করা শান্তিতে ভরে দিবে আপনার আমাদের জীবন ।

এটি ঠিক কথা- সন্তান, সর্বশক্তিমান আল্লাহর দান, আল্লাহ যদি দান না করে তাহলে অবশ্যই ছেলে সন্তান হোক আর মেয়ে সন্তান হোক মানুষের তো কোন ক্ষমতা নেই সে সন্তান পৃথিবীকে নিয়ে নিয়ে আসে । তাই অবশ্যই দয়াময় করুনাময় আল্লাহর দেয়া সন্তান আমাদেরকে ভালোভাবে মানুষ করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে আমাদের জীবনে কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে না পারে । সন্তান হলো সম্পদ তা যেন আপদ না হয় ! অর্থাৎ আমাদের প্রতিটি শিশুকেই মনুষত্ব, মানবিক গুণসম্পন্ন তৈরি করা উচিত ।
আমাদের সন্তানের সুন্দর আগামীর জন্য, আমাদের অসুন্দর ব্যবহার/অসৎ কর্ম/বদঅভ্যাসের বর্তমানকে ত্যাগ করতে হবে । পরিকল্পিত সংসার জীবনই নিয়ে আসবে কল্যানকর সমাজ ।
“ধর্মীয় জ্ঞানহীন সন্তান থাকার চেয়ে নিঃসন্তান হওয়া ভালো।” কিছু করতে না পারলেও ধর্মীয় জ্ঞান থাকলে পিতা মাতার মৃত্যুর পর আল্লাহর শাহীদরবারে চোখের পানি ফেলে দোয়াতো করতে পারবে !
এটিও আবার ঠিক যে অশিক্ষিত সন্তান থাকার চাইতে নিঃসন্তান থাকা ভালো । কারণ অশিক্ষিত সন্তান কোন দায়িত্ব পালন করতে পারেনা বা তাকে জীবনের বোঝাই মনে করা হয় সে আবার বাবা মাকে দেখবে কি করে বা সমাজকে দেখবে কি করে সে নিজেই তো সমাজের বোঝা হয়ে বেঁচে থাকে । তাই আমাদের উচিত প্রত্যেকটি সন্তানকেই সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা ।
অবশ্যই একজন মানুষ তার শিক্ষা জ্ঞান ও কর্মের মাধ্যমে বেঁচে থাকে তবে তার সন্তানকে যদি সে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে তাহলে সেই সন্তানের মধ্যে অবশ্যই অনেক দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকা সম্ভব । সন্তানকে সৎমানুষ, সুনাগরিক করা একটি কর্ম ।
মৃত্যুর স্বাদ সকলকেই গ্রহন করতে হবে, তবে সুখকর হয় যদি বলি...
“আমি চিরবিদায় নিচ্ছি না, আমার সন্তানের মাঝে আমি বেঁচে থাকবো বহু বহুদিন ।” 

বিবাহ বার্ষিকী


আমরা ৩০ বছর একসাথে কাটালাম । সুখ দুঃখ, হাসি কান্না এবং চরম বিপদ দিনের সাথী আমার । বিবাহ বার্ষিকী নিয়ে কখনো কিছু লিখিনি কিন্তু এবার অনেকেই অনেক অনেক দুর থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ধন্য করেছেন তাই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ কিছু কথা ।
একটা মানুষের ভালো থাকার জন্য হাজার জন নয় একজন'ই দরকার হয় ।
একজনের অল্প কিছু ভালো কথায়, ছোট ছোট যত্নশীলতায়, কিছু শাসন, বারন, ছোট্ট আবদার গুলোতেই ভালো থাকা যায়, সত্যিই খুব ভালো থাকা যায় ।
ভালো থাকার জন্য অনেক কিছু যেমন দরকার পড়েনা তেমনি অনেক মানুষেরও দরকার হয়না । শুধু একটা মানুষের দরকার হয় যে তার ভালো খারাপ সব সময় সাথে থাকবে, পাশে থাকবে ।
বিপদের সময় হুট করে হাতটা ছেড়ে দেয় না ।
সুখ খুব ছোট একটা শব্দ । এটা পেতেও খুব বড় কিছুর প্রয়োজন পড়ে না । ছোট ছোট খুশি গুলোই সুখের সৃষ্টি করে ।
আমরা যখন খুব নিঃসঙ্গ তখন হাজারটা মানুষের সঙ্গ অনুভব করি না, অনুভব করি একজনের সঙ্গ । যে মানুষটা আমাকে বোঝে, আগলে রাখে ভালো রাখতে চেষ্টা করে । সবাই এটা পারে না, সবার ভাগ্যে এমন মানুষ আসেও না ।
যতই আমরা অনেক মানুষের সাথে মিশি, ঘুরি, আড্ডা দেই, কিন্তু দিন শেষে একজনকেই খুঁজি যার সাথে আত্মার সম্পর্ক । (Soulmate)
বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা এমন জিনিস যা একসঙ্গে অনেকজনকে বাসা যায় না । আমরা বন্ধুত্ব করি ও ভালোবাসি ভালো থাকার জন্য । হাজার জনের মাঝে সুখ খুঁজে অসুখ ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না । সুখ খুঁজুন একজনের মাঝে তবেই সুখ ধরা দেবে ।
নিজেকে সুখী ভাবুন কাছের মানুষটিকে নিয়ে ।বিশ্বাস রাখুন আপনি সুখ পাবেন, সুখী হবেন ।
কে কার প্রাপ্য তা সময় বলে দিবে তার জন্য নিজেকে হতাশ ভাবার কিছু নেই ।
হাজার জনের মাঝে সুখ খুঁজা মানে আপনার নিজেরটুকুও বিলীন করে দেওয়া৷ তাই সুখী হতে এমন একজন বন্ধু খুঁজুন যে আপনাকে বুঝবে, আপনার চোখ দেখেই বুঝে নিবে আপনি তার প্রতি কতটা আসক্ত ।
হুম ,সেই জনকে নিয়েই ভাবুন তবেই ভালো থাকবেন অস্থির এই পৃথিবীতে । 💚❤️💜