আজ ২৯ জুলাই
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রথম কারাজীবনের কিছু মজার ঘটনাঃ
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রথম কারাজীবনের কিছু মজার ঘটনাঃ
১৯৭৩ সালে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে যোগদান করেন আল্লামা সাঈদী । সেই অপরাধে ১৯৭৫ সালে খুলনায় তিনি গ্রেফতার হন । সেদিনটি ছিলো ২৯জুলাই । খুলনার একটি মাহফিল শেষে বাড়ি ফিরতে ছিলেন
আল্লামা সাঈদী । এমন সময় কয়েকজন সাদা পোশাকধারী লোক তাঁকে বললেন, থানায় ডিআইএ-১ বসে আছেন ।
আপনার সঙ্গে কথা বলতে চায় !
আল্লামা সাঈদী প্রথমে বুঝতে পারেন নি তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে । তাই তিনি বললেন,ডিআইএ কে আমার বাসায় আসতে বলুন । তাদের একজন বললেন অনুগ্রহ করে থানায় চলুন । হুজুর থানায় গিয়ে জানলেন, তাঁকে উপরের
নির্দেশে গ্রেফতার করা হয়েছে । থানা নির্বাহী কর্মকর্তা তার নিজ বাসা থেকে বিছানা পত্র এনে হুজুরের শোবার ব্যবস্থা করে দিলেন । দুদিন সেই হাজতেই হুজুরকে থাকতে হয় ! সবচেয়ে মজার বিষয়, এই দুইদিন আল্লামা সাঈদী কোন ধরনের পুলিশ পাহারা ছাড়াই থানার পাশের মসজিদে গিয়ে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়তেন । নামায শেষে তিনি
নিজেই হাজতে প্রবেশ করতেন । দুইদিন পর,এক হাবিলদারের নেতৃত্বে ৫জন পুলিশ প্রহরায় হুজুরকে ঢাকায় পাঠানো
হয় ! কোন হাজতীকে কোর্টে চালান দেবার সময় নিয়ম হলো,হাতে হাত কড়া পরানো । কিন্তু হুজুরের হাতে কেউ
হাত কড়া পরানোর সাহস করছিলেন না ।
হাবিলদার বলল,আমার চাকরি গেলে যাবে আপত্তি নাই কিন্তু হুজুরের হাতে হাত কড়া পরাতে পারবো না ।
তারপর খুলনা থেকে ট্রেনে করে ঢাকার পথে যাত্রা শুরু করলেন, ৫জন পুলিশ প্রহরায় আল্লামা সাঈদী ।
এখানেও একটি মজার ঘটনা, সারারাত ৫পুলিশ ঘুমে অচেতন ছিল । আর তাদের রাইফেল গুলো পাহারা দেন,স্বয়ং
আল্লামা সাঈদী । তারপর হুজুরকে রাজারবাগ সিআইডি অফিসে নেয়া হয় ! সেখানে রেখে আসার সময়,ঐ হাবিলদার হুজুরের হাতে ২০টাকা দেন । বলেন, আপনার কাজে লাগতে পারে । তার আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে টাকাটি হুজুর গ্রহন
করেছিলেন ।
৩দিন পর,হুজুরকে কোর্টে তোলা হয় এবং কারাগারে চালান দেয়া হয় । কারাগারে যাবার পর তাঁকে ডিভিশন দেয়া হয় । কিন্তু তার আগে জেলার এসে, হুজুরকে অনুরোধ করলেন কয়েদীদের উদ্দেশ্যে একটি বক্তব্য দিতে । কথায় আছে,"ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে"। তারপর প্রায় ৪০০ কয়েদির সামনে আল্লাহপাকের কালাম থেকে বক্তব্য প্রদান
করেন আল্লামা সাঈদী । বিকেলে আল্লামাকে নেয়া হলো ৯ নম্বর সেলে । তাঁকে বলা হলো,এই রুমেই জামায়াতের
নায়েবে আমীর মাওঃ আবুল কালাম মোঃ ইউসুফ ২২মাস বন্ধী ছিলেন । তিনি মনে মনে খুশি হলেন, এই রুমে আমার
ওস্তাদ ছিলেন ।
কারাগারে সঙ্গী হিসেবে ৩৫জনকে পেয়েছিলেন আল্লামা সাঈদী । তাদের মধ্যে কেউ ছিলেন জাসদের, কেউ মুসলিম লীগের, আবার কেউ ছিলেন সিরাজ সিকদারের দলের লোক । তাদের মধ্যে মাত্র ৩জন নামায পড়তেন । তাদের কে নিয়মিত কোরআন তেলওয়াত করে শুনাতেন, হাদীস বর্ননা করতেন কখনো ইসলামী জলসা করতেন আল্লামা ।
আর এই কারনে তাদের মধ্য বেশির ভাগ-ই নামাযী হয়ে যায় । ১৯৭৫ সালের ১৫আগষ্ট-এর পট পরিবর্তনের কিছুদিন
পরে মুক্তিপান আল্লামা দে্লাওয়ার হোসাইন সাঈদী ।
[স্ট্যালিন সরকারের লেখা, রাজনীতিবীদদের কারাজীবন বই থেকে, সংগৃহিত]
হে আল্লাহ !
তোমার কোরআনের এই খাদেমকে তুমি তোমার গায়েবী মদদ দিয়ে হেফাজত করো । কোরআন তাফসীরের ময়দানে ফিরিয়ে দাও । আল্লাহুম্মা আমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন