দীর্ঘ এক মাস পর আমার শ্রদ্ধেয় আব্বার সাথে সাক্ষাত করলাম ।
আব্বা
প্রসঙ্গে প্রথম লিখতেই হয় ভালো আছে কিনা ? সত্যিকার অর্থে প্রচন্ড গরমে ওই
ছোট্ট রুমটিতে তিনি ভালো ছিলেন না । যদি লিখতাম ভালো নেই তবে নানান মানুষ
নানান ভাবে নিত ।
এরই মধ্যে কে বা কারা একটি গুজব ছড়িয়ে দিয়েছে যে,
আল্লামা সাঈদী কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন । গত দুদিন থেকেই হাজারো মানুষের
ফোনে আমি প্রায় দিশেহারা । শোকর আলহামদুলিল্লাহ, আজ সাক্ষাতে জানলাম আমার
আব্বা আল্লামা সাঈদী আল্লাহর মেহেরবাণীতে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন ।
আপনারা দোয়া করুন, যে বা যারা পরিকল্পিতভাবে এই ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে মহান
আল্লাহ এইসব গুজবের উসিলায় আল্লামা সাঈদীর নেক হায়াত আরো বাড়িয়ে দিন এবং
সুস্থ রাখুন, আমীন । মানসিক ভাবে আগে যেমন দৃঢ় ছিলেন, এখনো তেমন সুদৃঢ় আছেন
। গরমে শরীরটা তেমন ভালো যাচ্ছিলো না । আল্লাহর রহমতের বৃষ্টিতে সুস্থ,
ভালো আছেন ।
কথা যা হলো তার পুরোটাই রমজান কেন্দ্রিক । প্রথমেই একটি
হাদীস বললেন । হুজুরে পাক নবী কারীম মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলিহি
ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববীর মেম্বারে প্রথম ধাপে পা রাখলেন, বললেন,
আল্লাহুম্মা আমীন । দ্বিতীয় ধাপে পা রাখলেন, বললেন, আল্লাহুম্মা আমীন ।
ত্রিতীয় ধাপে পা রাখলেন বললেন, আল্লাহুম্মা আমীন । নামাজ শেষে সাহবায়ে
কেরাম প্রশ্ন করলেন, ইয়া আল্লাহর রাসুল (সাঃ) আমরাতো বুঝলাম না মেম্ব্রের
প্রতি ধাপে ধাপে আপনি কেন আল্লাহুম্মা আমীন বললেন ?
রাসুলে কারীম (সাঃ)
বললেন মেম্বরের কাছে আসতেই জিব্রাইল (আঃ) সালাম দিলেন, বললেন ঃ আমি দোয়া
করব, আপনি আমীন বলবেন । তিনি দোয়া করলেন -
১/ কোন সন্তান তার পিতা মাতা বা উভয়ের থেকে একজনকে জীবিত দশায় পেলো আর তার সেবা করে জান্নাত আদায় করাতে পারলো না, সে ধ্বংশ হোক ।
২/ কোন ব্যাক্তি আপনার নাম শুনলো, পড়লো, উচ্চারন করলো অথচ দুরুদ (সাঃ) পাঠ করলো না, সে ধ্বংশ হোক ।
৩/ যে ব্যক্তি রমজান মাস পেলো অথচ জান্নাত ওয়াজিব করতে পারলো না, সে ধ্বংশ হোক । (সহীহ বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ)
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং নিজের জন্য জান্নাতকে ওয়াজিব করতে হলে আল্লামা সাঈদী বললেন, তোমরা অবশ্যই করবে -
১ । ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতে আদায় করবে ।
২ । প্রত্যেক নামাজের পর মনে মনে আল্লাহর প্রশংসায় তাসবিহ পাঠ করবে ।
৩ । প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট অর্থ সহ কোরআন অধ্যায়ন করুন ।
৪ । প্রতিদিন অন্তত ২টি হাদীস এবং ১০ পৃষ্ঠা ইসলামী গ্রন্থ পাঠ করুন ।
৫ । পর চর্চা এবং গীবত পুরোপুরি বর্জন করুন ।
৬ । যত বেশী সম্ভব দান, খয়রা্ নফল এবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের চেস্টা করুন ।
৭ । ইফতারীর ১০ মিনিট পূর্বে ইফতারী সামনে নিয়ে বসুন । সবাই মিলে মহান
আল্লাহর মহিমা স্বরন করুন । নিজের ভুল ত্রুটির জন্য তাওবা ও ক্ষমা
প্রার্থনা করুন ।
৮ । রমজান মাসে যে কোন ভালো কাজের সাওয়াব অনেক বেশী তাই মানবতার সেবায় যতটুকু সম্ভব কাজ করুন । দ্বীনের দাওয়াত দিন ।
৯ । রোজার পরও আপনি যেন সংযমী, সুন্দর ও কল্যাণের জীবন যাপন করতে পারেন এবং দ্বীনের দাওয়াতকারী হিসেবে নিজেকে নিবেদিত করতে পারেন
সেজন্য আল্লাহ তায়ালার দরবারে সাহায্য প্রার্থনা করুন ।
১০ / সম্পদের হিসেব করে যাকাত দিন ।
বিদায়ের পূর্বে মোনাজাত করলেন । রোজাকে যেন কাজে লাগাতে পারি । রোজার সঠিক
আমল যেন করতে পারি । মহান আল্লাহ যেন আমাদের সকলের গুনাহ খাতা মাফ করে দেন
। আমীন । আব্বা বললেন ঃ আমি আপনাদের কাছে দোয়া চাই । রমজান মাসের ১২ থেকে
১৫টা রোজা পবিত্র মাক্কা এবং মদীনাতে কাটাতাম । গত পাচ বছর মরুভুমির দেশে
আল্লাহর পবিত্র ঘর বায়তুল্লাহ দেখিনা । আমার কলিজাটাও মরুভুমি হয়ে গেছে ।
মহান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা, স্বপরিবারে পবিত্র মক্কা এবং রাসুল (সাঃ) এর
রাওজা জিয়ারত না করিয়ে যেন মৃত্যু না দেন ।
আল্লাহুম্মা আমীন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন