রবিবার, ৭ জুন, ২০১৫

তায়াম্মুম পদ্ধতি এবং সফরের নামাজ

তায়াম্মুম পদ্ধতি
হজ্জের সফরের সময় বর্তমানে প্রায় সকলেই উড়ো জাহাজ বা প্লেনে যাতায়াত করে থাকেন । উড়ো জাহাজ বা প্লেনে অযু করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ । প্লেনে ওঠার পূর্বে অযু করে নেয়া ভালো । নামাজের সময় হলে কর্তৃপক্ষ প্লেনে মাটির চাকা সরবারহ করেন তায়াম্মুম করার জন্য । মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পবিত্র হবার নিয়ত করে বিসমিল্লাহ বলে দুই হাতের তালু একটু প্রসারিত করে পবিত্র মাটির ওপর ধীরে ধীরে মারতে হবে । অতঃপর  ফুক দিয়ে ঝেড়ে ফেলে প্রথমে মুখমন্ডল তারপর দুইহাত একবার হাতের কব্জি পর্যন্ত মাসাহ করতে হবে । যেমন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আম্মার রাদিআল্লাহু আনহুকে তায়াম্মুম করতে দেখে বলেছিলেন, "তোমর জন্য এইরুপ করাই যথেস্ট ছিলো" এই বলে তিনি তার দুই হাত মাটির উপর মারলেন এবং ফুক দিলেন । অতঃপর দুইহাত দ্বারা মুখমন্ডল ও দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত মাসাহ করলেন । (বোখারী-হা/৩৩৮, মুসলিম-হা/৮৬৪, মিশকাত-হা/৪৯৩)  
তায়াম্মুমের বিষয়টি নিয়ে মুহাদ্দিসীনের মধ্যে কিছুটা মতপার্থক্য রয়েছে । তবে সহীহ বোখারী ও সহীহ মুসলিম যাকে মুত্তাফাকুন আলাইহ বলা হয় এ দুটি হাদীস গ্রন্থে উল্লেখিত হাদীস অনুসরন করাই শ্রেয় বলে অধিকাংশ হাদীস বিশারদগন মনে করেন ।
সফরকালীন কসর নামাজ আদায়  
সফরে থাকাকালে কতোদিন অবস্থান করলে মুসাফির হিসেবে গন্য হবে, এ সম্পর্কে ইসলামী চিন্তাবিদগনের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে । সফরকালে মহান আল্লাহ তায়ালা ফরজ নামাজ যেখানে চার রাকায়াত সেখানে দুই রাকায়াত আদায় করার সুযোগ করে দিয়েছেন । আর সুন্নত ও নফল নামাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে, কেউ ইচ্ছা করলে সুন্নত ও নফল নামাজ আদায় করতে পারেন । তবে সুন্নত নামাজে কোন কসর নেই । হজ্জের সফরে কোন ব্যস্ততা থাকে না বিধায় যতোবেশী নামাজ আদায় করা যায় ততোই ভালো । মহান আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাকে যে সুযোগ দিয়েছেন তা গ্রহন করার মধ্যেই সওয়াব নিহিত রয়েছে ।
সফরকালীন দু'ওয়াক্ত নামাজ একত্রকরণ
হজ্জের সময় আরাফাত ও মুজদালিফায় যুহর-আসর ও মাগরিব- এশা একত্রে আদায় করার আদেশ রয়েছে এবং এটা হজ্জের কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত । কিন্তু অন্য সময় সফরে গেলে দুই ওয়াক্তের নামাজ একই সাথে আদায় করা যাবে কিনা, এ সম্পর্কে ইসলামী চিন্তাবিদগনের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে । কেউ বলেছেন, দুই ওয়াক্ত নামাজ একত্রে আদায় করা শুধু আরাফাত ও মুজদালিফায় অর্থাৎ হজ্জের সময় সীমাবদ্ধ । আবার কেউ বলেছেন, বিষয়টি কেবল হজ্জের সময় সীমাবদ্ধ নয়, অন্য সময়ে সফরে গেলেও সফরকারী ব্যক্তি যুহর-আসর ও মাগরিব-এশা একত্রে আদায় করতে পারেন এবং এটাই হাদীস সম্মত । ---(চলবে)
"শারঈ' মানদন্ডে
দোয়া-যিকির,হজ্জ ও উমরা"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন