ইসলামের পাচটি বুনিয়াদের মধ্যে হজ্জ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকন যার সাথে জড়িত রয়েছেন আমাদের আদি পিতা হযরত আদম (আঃ), মুসলিম মিল্লাতের পিতা হযরত ইবরাহীম (আঃ) ও সাইয়্যেদুল মুরসালীন বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহ সকল নবী ও রাসুল । পৃথিবীতে প্রেরিত অগনিত নবী রাসুল ও মহান আল্লাহর বন্ধুদের চোখের পানিতে সিক্ত হয়েছে হজ্জ আদায়ের স্থান সমূহ । এসব স্থানের সম্মান, মর্যাদা ও ফজিলত বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না । পবিত্র কুরআন ও হাদীসে হজ্জের অসংখ্য ফজিলতের কথা বর্ণনা করা হয়েছে । হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষে হজ্জ আদায় করবে এবং হজ্জ আদায়ের সময় স্ত্রী মিলন ও এ সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে এবং কোন ধরনের গুনাহের কাজে লিপ্ত হবে না, সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতোই সে নিস্পাপ অবস্থায় ঘরে ফিরবে । (বোখারী, মুসলিম)
বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মক্কায় গিয়ে হজ্জ আদায় করো, পানি যেমন ময়লা পরিস্কার করে তেমনি হজ্জও গুনাহ পরিস্কার করে । (বোখারী)
হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে, যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন দ্বারা হজ্জ আদায় করে পরিপূর্ণ মুমীনের ন্যায় জীবন যাপন করবে তার জীবনের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিয়ে তাকে জান্নাত দেয়া হবে । হাজীগন মহান আল্লাহর মেহমান এবং হজ্জ উত্তম আমলসমুহের মধ্যে একটি । হজ্জ হচ্ছে বৃদ্ধ, দুর্বল ও মহিলাদের জন্য জিহাদ আর হজ্জের বিনিময় হলো জান্নাত । মহান আল্লাহ তায়ালা হাজীর সুপারিশ কবুল করবেন এবং হজ্জের সফরে যারা মৃত্যুবরন করবে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাকে বিনা হিসাবে জান্নাত দান করবেন । হজ্জের জন্য যে অর্থ ব্যায় করা হবে মহান আল্লাহ তার সওয়াব সাতশত গুন বেশী দান করবেন ।
উমরা আদায়ের অগনিত ফজিলত রয়েছে । নবী করীম মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা হজ্জ ও উমরা একই সাথে সম্পন্ন করো, কারন এগুলো দারিদ্র ও গুনাহকে এমনভাবে দূর করে, যেভাবে কামারের হাপর লৌহ, স্বর্ণ ও রৌপ্যের ময়লা দূর করে দেয় । (তিরমিযী)
রাসুলে আকরাম সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হজ্জ ও উমরা আদায়কারী আল্লাহর মেহমান । তারা যদি আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করে তিনি কবুল করেন এবং যদি তারা ক্ষমা চায় তাহলে তাদের ক্ষমা করা হয় । (ইবনে মাজাহ)
সাইয়্যেদুল মুরসালীন মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রমজান মাসের উমরা, হজ্জের সমান । (বোখারী, মুসলিম)
আরেক হাদীসে বলা হয়েছে, রমজান মাসের উমরা সেই হজ্জের সমান যা নবী করীম
সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আদায় করা হয়েছে । তবে এর মানে এই নয় যে, যাদের ওপরে হজ্জ আদায় ফরজ হয়েছে, তারা শুধু উমরা করবেন । হজ্জ ফরজ হলে অবশ্যই তাকে হজ্জ আদায় করতে হবে ।-------------(চলবে)
"শারঈ' মানদন্ডে
দোয়া-যিকির,হজ্জ ও উমরা"
Shameem Sayedee - শামীম সাঈদী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন